দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সবচেয়ে বিপদে আছে সাধারণ মানুষ। ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণ। এর ওপর নতুন যোগ হয়েছে ইউরিয়া সারের বাড়তি দামের বোঝা। এ অবস্থায় চালসহ কৃষিপণ্যের এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। কৃষকরা বলছেন, ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা জমির আবাদ কমানোর কথা ভাবছেন। ফলে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন কমে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারের দাম না বাড়িয়ে সরকারের উচিত ভর্তুকি বাড়ানো। নয়তো এর প্রভাব পড়বে সর্বত্র। খাদ্যনিরাপত্তা বিঘিœত হবে। এ বছর ১০-১৫ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। আগামীতে আমদানি আরও বাড়বে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যেখানে খাদ্যশস্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে, সেখানে আমদানিও অনেকটা অনিশ্চিত। কাজেই চাল আমদানিতে নির্ভরশীল না হয়ে উপকরণের দাম কমিয়ে রেখে উৎপাদন বাড়ানোই হলো যুক্তিযুক্ত কাজ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের দেশে সব বোঝা আর দুর্ভোগের জন্য জনগণ। বহু দেশে করোনাকালে মানুষের আয় সমর্থনসহ নানা ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। সরকারের আওতায় থাকা জিনিসপত্রের দাম কমিয়েছে। আমাদের দেশে হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থাকলেও মধ্যবিত্তদের জন্য কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। ফলে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে অযৌক্তিক, অন্যায্যভাবে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পণ্যমূল্য বর্ধিত করে বিক্রি করে। তাই অসাধু ব্যবসায়ীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে এবং মজুদদারদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে। পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পণ্য সরবরাহের প্রতিটি পর্যায় হতে হবে নির্বিঘ্ন।
সরকারকে মনে রাখতে হবে, চালের দাম বাড়লে অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়ে যায়। তাই সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বেড়ে যাওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।
[…] […]