ক্রিকেটতারকা মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা অন্যরকম। তিনি ক্রিকেটতারকা হিসেবে তুমুল জনপ্রিয়, আবার সংসদ সদস্য হিসেবেও বেশ সুনাম রয়েছে। তাই ক্রিকেটবস মাশরাফির প্রতি ভালোবাসার যেন কমতি নেই। সঙ্গতকারণেই আসন্ন কোরবানি ঈদে মাশরাফির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ‘নড়াইলের বস’ নামে প্রায় ২৫ মণ ওজনের সাদা-কালো একটি ষাঁড়। রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি এ বছর ১৬টি গরু মোটাজাতাকরণ করেছেন রিপন মিনা নামের এক তরুণ। এর মধ্যে ২৫ মণ ওজনের ‘নড়াইলের বস’ ষাঁড়টি লালন-পালন করেছেন ক্রিকেটবস মাশরাফির জন্য। রিপন মিনার খামারে এটিই সবচেয়ে বড় ষাঁড়। যার বাজার মূল্য ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা। ‘নড়াইলের বস’ ষাঁড়টিসহ রিপন মিনার খামার দেখে মুগ্ধ সবাই। দুর-দুরান্ত থেকে দেখতে আসছেন অনেকেই।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খড়ড়িয়া গ্রামের সৌখিন খামারি রিপন মিনা ঢাকায় রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি তিন বছর ধরে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করেন। এ বছরও কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য ১৬টি গরু লালন-পালন করেছেন। প্রতিটি ষাঁড় ২০ থেকে ২৫ মণ ওজন হবে বলে প্রত্যাশা খামার পরিচর্যাকারীদের। আকার ভেদে ষাঁড়গুলো চার থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তারা। এক বছর আগে প্রতিটি ষাঁড় দুই লাখ টাকা করে কেনেন রিপন মিনা।
তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ‘নড়াইলের বস’ ষাঁড়টি ক্রিকেটবস মাশরাফিকে দিব। যেদিন থেকে ষাঁড়টি লালন-পালন করছি, সেদিন থেকেই মাশরাফি ভাইকে ষাঁড়টি দেয়ার স্বপ্ন লালন করছি। আমার প্রিয় ষাঁড়টি (প্রায় ২৫ মণ ওজন) মাশরাফি ভাইকে দিতে পারলে তরুণ উদ্যেক্তা হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করব। এতে এলাকাবাসীও খুশি হবেন। আর ষাঁড়টিকে ঘাস, খড়সহ দানাদার জাতীয় খাবার দিয়েছি। বিশেষ করে ‘আপেল’সহ অন্য ফল খাওয়ানো হয়েছে। খামারের অন্য ষাঁড়গুলোও প্রাকৃতিক উপায়ে বড় করা হয়েছে। ঈদের আগে মাশরাফি ভাইকে ষাঁড়টি দেয়ার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন :
কী পরিমাণ গোসত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
নাম তার ‘বিগবস’ কিনলে সাথে মোটরসাইকেল ফ্রি
খামার পরিচর্যাকারী রুহোল আমিনসহ খড়ড়িয়া গ্রামের মোস্তাক আহমেদ বলেন, রিপন মিনার খামার দেখে আমরা সবাই খুশি। তার (রিপন) সাফল্য দেখে অনেকেই খামারের প্রতি ঝুঁকেছেন। আর মাশরাফি এমপি মহোদয়ের উদ্দেশ্যে যে গরুটি বড় করা হয়েছে, সেটি দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর। সাদা-কলো রঙের ষাঁড়টি যে কারো নজর আটকাবে।
এদিকে, নড়াইলের বিভিন্ন খামারে ৬৪ হাজার ৭৪৮ হাজার গরু, ছাগলসহ অন্যান্য কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ১৮হাজার ৪৬৭টি, ছাগল ৪৬ হাজার ৯৬টি এবং ভেড়া ১৮৫টি। তবে অনেকেই হাটে কেনাবেচার চেয়ে খামার থেকে কিনছেন কোরবানির পশু। ঈদের আগ মুহূর্তে হাটবাজারে কেনাবেচা আরো জমে উঠবে, প্রত্যাশা সবার।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) শহর সংলগ্ন মাদরাসা হাটে দেখা যায়, অনেকে গরু-ছাগল কিনছেন। আবার অনেকে দেখে-শুনে যাচ্ছেন। এ বছর নড়াইলে আটটি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হচ্ছে। ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে গরুর বেশি চাহিদা রয়েছে। এক্ষেত্রে ছাগলের চাহিদা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মারুফ হাসান বলেন, চাহিদার চেয়ে নড়াইলে কোরবানির পশু গরু, ছাগল ও ভেড়া বেশি প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় ২৭ হাজার ২৮২টি পশু কোরবানির চাহিদা রয়েছে। বাকি ৩৭ হাজার ৪৬৬টি পশু রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করবেন খামারিরা। প্রাকৃতিক ও বৈজ্ঞানিক খাদ্যের সমন্বয়ে গরু লালন-পালন করেছেন তারা। বাজে কোনো ওষুধ প্রয়োগে মোটাতাজাকরণ করা হয়নি। এছাড়া কোরবানিযোগ্য পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাটগুলোতে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম রয়েছে। অনলাইনেও বেচাকেনার সুযোগ থাকছে।