‘কালা মানিক’ নামে ২৫ মণ ওজনের এ ষাঁড়টি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় এবার সবচেয়ে বড় ষাঁড় বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাছবি: প্রথম আলো
কালো রঙের সুঠাম দেহের ষাঁড়টির ওজন ২৫ মণ। লম্বায় ৯ ফুট ও ৫ ফুট উচ্চতার ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড় দেখতেও আকর্ষণীয়। বেশ আদর-যত্ন করে তিন বছর ধরে প্রাণীটিকে লালন–পালন করছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মিলন মিয়া। দেখতে কালো বলে ষাঁড়টির নাম রেখেছেন ‘কালা মানিক’। এবারের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান তিনি। এ জন্য দাম হাঁকিয়েছেন ৮ লাখ টাকা। ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন লোকজন ভিড় জমাচ্ছে মিলন মিয়ার বাড়িতে।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মিলন মিয়া তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার আগে ২০০৭ সালে তিনি নিজের বাড়তি গড়ে তোলেন গরুর খামার। ৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি বকনা বাছুর কিনে খামার শুরু করলেও বর্তমানে ২০টি গাভি ও ষাঁড়ের মালিক তিনি। ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ২০২০ সালে মে মাসে তাঁর খামারেরই একটি গাভি এই ষাঁড়ের জন্ম দেয়। জন্মের পর বাছুরটিকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন মিলন মিয়া। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যায় ষাঁড়টির আকৃতি বাড়ে। দুই বছর বয়সী ষাঁড়টির ওজন বেড়ে ২৫ মণে এসে দাঁড়ায়। ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে পরিমাপ করে গরুটির ওজন নিশ্চিত হয়েছেন তিনি।
আজ শুক্রবার সকালে মিলন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ষাঁড়টি আধা পাকা ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছে। ‘কালা মানিক’ নাম ধরে ডাকতেই গর্জে ওঠে। মিলন মিয়া বলেন, ‘কালা মানিককে সন্তানের মতো করেই লালন–পালন করেছি। প্রতিদিন গোসল করিয়েছি। নিয়মমতো খাবার ও ওষুধ দিয়েছি। শখ করে নাম রেখেছি কালা মানিক। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি এই কালা মানিকের জন্য। অপরিচিত লোক তো দূরের কথা, রাতে একটা বিড়াল কিংবা ইঁদুর বাড়িতে দেখলেও মানিক গর্জে ওঠে, ডাকাডাকি করে। বের হয়ে তখন তাঁর কাছে গেলে শান্ত হয়।’
আরও পড়ুন :
সবচেয়ে বড় কানের ছাগল ছানা পাওয়া গেল পাকিস্তানে
২০ লাখ টাকা দাম হাকা হলো ৩৬ মণ ওজনের ‘স্বপ্নরাজ’ এর
মিলন মিয়া আরও বলেন, ‘কালা মানিকের প্রতি মায়া অনেক। কিন্তু করার কিছু নেই। এবারে ঈদে তাকে বিক্রি করতে হবে। আট লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে কালা মানিককে কিনতে লোকজন আসছেন।’ তিনি জানান, কালা মানিকের খাদ্যতালিকায় আছে নেপিয়ার জাতের কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, তৈলবীজের খইল, ছোলা ও খুদের ভাত। সব মিলিয়ে ষাঁড়টি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ টাকার খাবার খায়। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিনে দিনে খাবারের পরিমাণ বাড়ছে। মাসে ১২-১৩ হাজার টাকা খরচ হয় ষাঁড়টির খাবারের পেছনে।’
ইকরচালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিলন মিয়ার ষাঁড়টির খবর আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় লোকজন তাঁর বাড়িতে ভিড় করছে। তিনি ষাঁড়টির দাম আট লাখ টাকা চেয়েছেন। কিন্তু তারাগঞ্জে এত দাম দিয়ে গরু কেনার লোকজন তেমন নেই। ঢাকার কোনো ব্যবসায়ী ষাঁড়টি দেখলে হয়তো কাঙ্ক্ষিত দাম পাবেন তিনি।
তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফরহাদ নোমান বলেন, মিলন রহমান একজন আদর্শ খামারি। তাঁকে দেখে অনেক তরুণ–যুবক গাভির খামার গড়ে তুলেছেন। কালা মানিককে তিনি নিজ খামারে লালন–পালন করেছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সব সময় ষাঁড়টির খোঁজখবর রাখা হয়েছে। এটি উপজেলায় এবার সবচেয়ে বড় ষাঁড়।
[…] ‘কালা মানিক’ নাম ধরে ডাকতেই গর্জে ওঠে … […]
[…] ‘কালা মানিক’ নাম ধরে ডাকতেই গর্জে ওঠে … […]
[…] ‘কালা মানিক’ নাম ধরে ডাকতেই গর্জে ওঠে ২… […]
[…] ‘কালা মানিক’ নাম ধরে ডাকতেই গর্জে ওঠে … […]