নারকেলি চেলা ও তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন

মিঠাপানির বিপন্ন প্রজাতির মাছ নারকেলি চেলা ও তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা।

দেশে প্রথমবারের মতো মিঠাপানির বিপন্ন প্রজাতির মাছ নারকেলি চেলা ও তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলবার দুপুরে সংস্থাটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের স্বাদুপানি উপকেন্দ্র থেকে নারকেলি চেলা এবং ময়মনসিংহের স্বাদুপানি কেন্দ্র থেকে তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করেন বিজ্ঞানীরা। চলতি বছরের মে মাসে তাঁরা এই সফলতা অর্জন করেন।

বিএফআরআইর পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারকেলি চেলা মাছের প্রজনন গবেষণায় যুক্ত ছিলেন মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খোন্দকার রশীদুল হাসান, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক হায়দার, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাশরিফ মাহমুদ মিনহাজ ও শ্রীবাস কুমার সাহা। আর তিতপুঁটি মাছের গবেষণায় ছিলেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অনুরাধা ভদ্র, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহীন আলম ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিনা ইয়াসমিন।

আরও পড়ুন :

পবিত্র কোরআন হাতেই লিখে ফেললেন আওয়ামী লীগ নেত্রী জারিন তাসনিম দিয়া

বাংলাদেশী নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন কে-টু ও ব্রড পিক শৃঙ্গ ছুঁতে যাচ্ছেন

বাংলাদেশের দুই স্থাপত্য আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার তালিকায় স্থান পেল

উদ্ভাবন নিয়ে গবেষক শাহীন আলম বলেন, একসময় মলা, ঢেলা, পুঁটি মাছ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর পুষ্টির অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত হতো। প্রাকৃতিক জলাশয় কমে যাওয়ায় এসব মাছের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হতে থাকে সাধারণ ভোক্তারা। মানুষের পাতে আবার এসব মাছ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিএফআরআইর গবেষকেরা কাজ করছেন।

মিঠাপানির বিপন্ন প্রজাতির মাছ নারকেলি চেলা ও তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা

মিঠাপানির বিপন্ন প্রজাতির মাছ নারকেলি চেলা ও তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরাছবি: সংগৃহীত

সংস্থাটি জানায়, নারকেলি চেলা অঞ্চলভেদে কাটারি ও নারকালি চেলা নামে পরিচিত। মাছটি নদী, পুকুর, বিল, হ্রদ ও খালের তলদেশে থাকে। সুস্বাদু হওয়ায় উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছটি খুবই জনপ্রিয়। মাছটিতে মানবদেহের জন্য উপকারী অণুপুষ্টি উপাদান—ভিটামিন এ ও জিংক আছে।

তিতপুঁটি মাছটি একসময় নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় ও পুকুরে পাওয়া যেত। মাছটি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে মাছটি বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। তিতপুঁটিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান, যা মানবদেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করে। মাছটি অ্যাকুয়ারিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া শিদল ও শুঁটকি তৈরিতেও তিতপুঁটি ব্যবহৃত হয়।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, দেশীয় ছোট মাছ বাঙালির সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ ধরনের মাছ পুষ্টিগুণে ভরা। বিপন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ সুরক্ষায় বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। বিএফআরআই বিপন্ন প্রজাতির মাছ ফিরিয়ে আনতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএফআরআই বিলুপ্তপ্রায় ও দেশীয় মাছের ওপর গবেষণা চালিয়ে ৩৬ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

সূত্র : প্রথম আলো

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষ চারে - Ajker Valo Khobor
2 years ago

[…] […]