২০ লাখ টাকা দাম হাকা হলো ৩৬ মণ ওজনের ‘স্বপ্নরাজ’ এর

সাদা-কালো ডোরাকাটা ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরুটি হাঁটে হেলেদুলে। বিশাল দেহের অধিকারী তবে বেশ শান্তশিষ্ট। কাউকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে না। তিনবেলা ১৭ থেকে ১৮ কেজি স্বাভাবিক সুষম খাবারের পাশাপাশি নাস্তা হিসেবে আপেল, কলা, আঙুরসহ বিভিন্ন ফলমূল তার খুব পছন্দ। নাম তার ‘স্বপ্নরাজ’। আর তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন খামারী মোজাম্মেল হক বাবু দম্পতি।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘইল মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত শহীদ আলী ফকিরের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বাবুর খামারে রয়েছে এই ষাঁড় গরুটি। ভালোবেসে নাম রেখেছেন ‘স্বপ্নরাজ’। চার বছর ধরে লালন পালন করছেন তিনি। খামারী বাবুর দাবি, ছয় দাঁতওয়ালা গরুটির ওজন আনুমানিক ৩৬ মণ। গরুটি বিক্রির জন্য তিনি দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। গরুটি দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন অনেকেই।

মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, বংশ পরম্পরায় তারা গরুর খামারী। ছোটবেলা থেকেই গরু লালনপালন করেন। চার বছর আগে তার নিজের খামারে গাভী থেকে একটি বাছুর হয়। সেটিকে তিনি খুব যত্ন করে লালন পালন করতে থাকেন। তার সঙ্গে স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুনও বেশ পরিশ্রম করেন। বড় হতে থাকে ষাঁড়টি। সেইসঙ্গে বড় হতে থাকে কৃষক দম্পতির স্বপ্ন। সেইজন্য ভালোবেসে তারা গরুটির নাম রাখেন ‘স্বপ্নরাজ’। 

আরও পড়ুন :

ঈদে মাংস খাবেন বলে সারা বছর সমিতিতে সঞ্চয়

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ৭৮ হাজার টাকা

১১তম স্ত্রীকে রশি দিয়ে বেঁধে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ান তিনি

বাবু জানান, চার বছরে স্বপ্নরাজ এখন বিশাল দেহের অধিকারী হয়েছে। ফিতা দিয়ে গরুর দৈর্ঘ্য ব্যসার্ধ মেপে ধারণা, স্বপ্নরাজের ওজন অন্তত ৩৬ মণ হবে। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। কোনো হাটে নিয়ে নয়, বাড়ি থেকেই বিক্রির আশা করছেন তিনি। গত বছর কোরবানির আগে স্বপ্নরাজের ওজন ছিল ২২/২৩ মণ। তখন দাম উঠেছিল ৬ লাখ টাকা। কিন্তু ওই দামে বিক্রি করেননি তিনি। তবে, এবার স্বপ্নরাজকে বিক্রির মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চান।

মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, স্বপ্নরাজকে লালন পালনে মোটাতাজা করতে তিনি কোনো মেডিসিন বা ইনজেকশন ব্যবহার করেননি। তিনবেলা সুষম খাবার দিয়েছেন। প্রতিদিন ১৭-১৮ কেজি খাবার খায় স্বপ্নরাজ। খাবারের তালিকায় রয়েছে ভুট্টা, ছোলা, যব, খেসাড়ি ডাল, ডাবরী, ধইঞ্চা, মসুর ডাল। এগুলো ভাঙিয়ে গুড়া করে নেওয়া হয়। তার সঙ্গে গমের ছাল, তিলা খৈল, ধানের গুড়া মিশিয়ে নিয়ে জাল দিয়ে ফুটিয়ে তিনবেলা খাওয়ানো হয়। তবে, এসব খাবারের পাশপাশি তিনবেলা কলা, আপেল, আঙুর সহ নানারকম ফলমুল খুব পছন্দ স্বপ্নরাজের।

মোজাম্মেল হক বাবুর স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, ‘চার বছর ধরে স্বপ্নরাজকে নিজের সন্তানের মতো লালন পালন করেছি। মানুষ সন্তানকে যেমন আগলে রাখে, আমিও তেমনভাবে আগলে রেখেছি। নিজের হাতে খাইয়েছি, যত্ন করেছি। এখন বিক্রি করে দিতে হবে শুনে সন্তান হারানোর মতো কষ্ট পাচ্ছি।’

এদিকে, এত বড় ষাঁড় গরু দেখতে খামারী মোজাম্মেল হক বাবুর বাড়িতে ভিড় করছেন অনেকেই। গরু দেখতে আসা মনিরুল ইসলাম ও শামীম হোসেন বলেন, ‘এখানে বিশাল গরু আছে শুনে দেখতে আসছি। এত বড় গরু এর আগে দেখিনি। ওজন শুনলাম ৩৬ মণ। আশা করি, খামারী গরুটি বিক্রি করে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।’

চাটমোহর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বড় গরুর চাহিদা আর আগের মতো নেই। আমরা কৃষককে এত বড় করতে উৎসাহিত করি না। মোজাম্মেল হক বাবুর বড় ষাঁড় গরুর বিষয়টি জানি। আশা করি তিনি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন। কোরবানিকে সামনে রেখে আমরা খামারীদের সবসময় পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকি। অনলাইনে গরুর বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে উপজেলার খামারীদের গরুর ছবি ও তথ্য আপলোড করা হচ্ছে।

সূত্র : সমকাল

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
5 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
সবচেয়ে বড় কানের ছাগল ছানা পাওয়া গেল পাকিস্তানে - Ajker Valo Khobor
3 years ago

[…] […]

নো অটোপাস, এসএসসি পরীক্ষা ঈদের পরেই - Ajker Valo Khobor
3 years ago

[…] […]

‘কালা মানিক’ নাম ধরে ডাকতেই গর্জে ওঠে ষাড়টি - Ajker Valo Khobor
3 years ago

[…] […]

কোরবানির হাট কাপাতে আসছে ৩২ মণ ওজনের ‘মেসি’ - Ajker Valo Khobor
3 years ago

[…] […]

নাম তার 'বিগবস' কিনলে সাথে মোটরসাইকেল ফ্রি - Ajker Valo Khobor
3 years ago

[…] […]