রাসায়নিকবোঝাই কনটেইনার থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে ছিলেন ডিপোর ট্রাকচালক মোহাম্মদ জনি। আগুন দেখে অন্য অনেকের মতো তিনিও উৎসুক মনে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে বিকট শব্দে রাসায়নিকবোঝাই কনটেইনারটি বিস্ফোরিত হয়। আর ছিটকে পড়েন জনি। তবে তাঁর সামনে আরও একটি কনটেইনার থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জনি বলেন, ‘কীভাবে বেঁচে গেছি, জানি না। সামনে কনটেইনার না থাকলে হয়তো জীবন চলে যেত। নতুন জীবন পেলাম।’
জনির মতো প্রাণে বেঁচে গেছেন নুরুল ইসলামও। তিনি কেমিক্যাল কনটেইনার থেকে ৪০ গজ দূরে ছিলেন। চিকিৎসাধীন ১৯ বছর বয়সী এ তরুণ বলেন, তিনি ভিডিও করছিলেন আগুনের।

আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাছবি: প্রথম আলো
তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচজন ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর তাঁরা সবাই ছিটকে পড়েন। তাঁর পাশেই দুজনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে ছিল। তাঁর গায়েও আগুন লেগে যায়। পরে তিনি একটি নালার পাশে থাকা টিউবওয়েল থেকে শরীরে পানি দেন।
আরও পড়ুন :
মোবাইলে বাবার সাথে ছেলের শেষ কথা : “বাবা আমার একটা পা উড়ে গেছে। আমাকে কলমা পড়ে সাফ করে দেন।’’
রোবোটিক হাত বানিয়ে আশা দেখাচ্ছেন চট্টগ্রামের জয় বড়ুয়া
ওই নালায় একজনের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আহত অবস্থায় কয়েকজন লোক তাঁকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ফরমানুল ইসলামও। বিস্ফোরণের পর তাঁর গায়ে আগুন লেগে যায়। পরে তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বাঁচেন। ফরমানকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর বড় ভাই মো. জাহেদুল ইসলাম। জাহেদুল প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে নয়টার দিকে একটু একটু ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তাঁর ভাই তখন ডিপোতেই ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর বিস্ফোরণ হয়।
জাহেদুল আরও বলেন, বিস্ফোরণের পর তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ঘটনাস্থল থেকে তাঁর বাসার দূরত্ব পাঁচ থেকে সাত মিনিটের। পরে তিনি দেখতে পান, অসংখ্য মানুষ পোশাক ছাড়া দৌড়ে ডিপোর বাইরে আসছেন। তাঁদের মধ্যে তাঁর ভাই ফরমানুলও ছিলেন।
হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের এমন আরও ১০ জনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁদের মধ্যে ৪ জন আগুনের ভিডিও করছিলেন। তাঁদের ডিউটির সময় শেষ হয়েছিল। আর বাকিরা কর্মরত ছিলেন।
[…] […]
[…] […]
[…] […]
[…] […]