১৪ বছরেও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা অর্জন করতে পারেননি ৪১ শতাংশ শিক্ষক

১৪ বছর আগে চালু হয়েছে, তবু সৃজনশীল পদ্ধতি বোঝেন না দেশের ৪১ শতাংশ স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষক। তারা অন্য কোনো শিক্ষকের সহায়তায় প্রশ্ন প্রণয়ন করেন বা নোট-গাইড কোম্পানীর কাছ থেকে প্রশ্ন কিনে আনেন। এমনকি পাঠ্যক্রমের ওপর ৩৫ শতাংশ ও সৃজনশীল পদ্ধতির ওপর ৩৮ শতাংশ শিক্ষকের প্রশিক্ষণ নেই। যেহেতু শিক্ষকদেরই অনেকে সৃজনশীল বোঝেন না, তাই মাধ্যমিকের অনেক শিক্ষার্থীই এখনো দুর্বল। যাদের ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও আলাদা কোনো উদ্যোগ নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের অ্যাকাডেমিক সুপারভিশন রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে মাউশি অধিদপ্তর  এই প্রতিবেদন তৈরি করে আসছে ফি বছর।   

সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বর মাসের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে মাউশির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার একিউআই সেল। এই প্রতিবেদন তৈরিতে দেশের ৪ হাজার ৭৬টি বিদ্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

সুপারভিশন রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ৪ হাজার ৭৬ বিদ্যালয়ের ৫৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষক নিজেরাই সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়ন করতে পারেন। অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সহায়তায় প্রশ্ন প্রণয়ন করেন ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ শিক্ষক। বাইরে থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন সংগ্রহ করেন ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ শিক্ষক। অর্থাৎ প্রায় ৪১ শতাংশ শিক্ষক ঠিকমতো সৃজনশীল পদ্ধতি বোঝেন না।

আরও পড়ুন :

★★৫৫ বছরের বেলায়েত শেখ এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন

★★সুন্দরবনের পুরুষ বাঘ সঙ্গীর সন্ধানে যাচ্ছে ভারতে

তবে সৃজনশীল পদ্ধতিতে বিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়নের হার সবচেয়ে বেশি সিলেটে ৭১ দশমিক ০৭ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম বরিশাল অঞ্চলে ৩৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

সৃজনশীল না বোঝার পেছনে অন্যতম কারণ শিক্ষকদের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের অভাব। ৪ হাজার ৭৬ বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রশিক্ষণের রেজিস্টার সংরক্ষণ করেছে ৩ হাজার ২৮৮ বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে ৫৬ হাজার ১১৬ জন শিক্ষকের মধ্যে বিএড (ব্যাচেলর অব এডুকেশন) প্রশিক্ষণ আছে ৪৩ হাজার ৫৭১ জনের। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে প্রশিক্ষণ আছে ২৯ হাজার ৩৮৬ জনের। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ আছে ২২ হাজার ৪০৭ জনের। পাঠ্যক্রমের ওপর প্রশিক্ষণ আছে ৩৬ হাজার ৪৭১ জনের। অর্থাৎ ৩৫ শতাংশ শিক্ষকেরই পাঠ্যক্রমের ওপর প্রশিক্ষণ নেই। আর সৃজনশীলে প্রশিক্ষণ আছে ৩৪ হাজার ৯৬৩ জনের। অর্থাৎ ৩৮ শতাংশ শিক্ষকেরই সৃজনশীলে প্রশিক্ষণ নেই। অথচ গত ১৪ বছর ধরে তারা সৃজনশীল পড়িয়ে যাচ্ছেন।

সুপারভিশনকৃত বিদ্যালয়ে এক বা একাধিক বিষয়ে ৩০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। তবে কত সংখ্যক শিক্ষার্থী তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এমন বিদ্যালয় ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয় না এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩ দশমিক ০৬ শতাংশ। আর দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে না আবার কোনো ব্যবস্থাও নেয় না এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ।

অ্যাকাডেমিক সুপারভিশনের সুপারিশেও বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে সৃজনশীল পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হলে বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে হবে। নিজেরাই যাতে প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারেন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সূত্র : দৈনিক শিক্ষা

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
এসএসসি পরীক্ষায় যে ধরনের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে - Ajker Valo Khobor
2 years ago

[…] ১৪ বছরেও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র সম্পর্কে… […]