মুমিনুল হক অধিনায়কের পদ ছেড়ে দিলেন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলগত ও ব্যক্তিগত ব্যর্থতার পর সাদা পোশাকে বাংলাদেশের জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকতে চাইছেন না মুমিনুল হক।

টানা ব্যাট হাতে খারাপ পারফর্ম করার পর টেস্ট দলের অধিনায়কের পদ থেকে আজ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

অধিনায়কত্ব ছাড়ার কারণ হিসেবে তিনি একটা কথাই জোর দিয়ে বলেন, যে তিনি দলের জন্য ‘অবদান রাখতে পারছেন না।’

“অধিনায়ক হিসেবে দলে অবদান রাখতে পারছিনা। দলকে অনুপ্রেরণা দিতে পারছি না।”

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সাথে একটি বৈঠকে বসেন মুমিনুল হক।

সভা থেকে বের হয়ে গুলশানে বিসিবি প্রেসিডেন্টের বাসায় সাংবাদিকদের মুমিনুল হক বলেন, তিনি বোর্ডকে জানিয়েছেন যে তার একটা বিরতি হলে ভালো হয়, বিরতিটা অধিনায়কত্ব থেকেই।

মুমিনুল হকের মতে, অধিনায়ক হিসেবে যখন ভালো খেলবেন তখন দল ফল না পেলেও অনুপ্রেরণা দেয়া যায়।

আরও পড়ুন :

★★এবারের আইপিএলে সেরা হলেন কারা

★★নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য বয়স ১২ বছর পূর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক

“আমিও ভালো খেলছিনা। দলও ফল পাচ্ছে না। এই সময়ে অধিনায়কত্ব করাটা কঠিন।”

মূলত শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশের পরাজয়ই এই সিদ্ধান্ত ত্বরান্বিত করলো।

“আমার কাছে মনে হয় ব্যাটিংটায় যদি মনোযোগ দিতে পারি সেটাই ভালো হয়।”

তবে এই সিদ্ধান্তকে খুব একটা কঠিন বলে মনে করেন না তিনি।

তিনি বোর্ডকে জানিয়েছেন, “নতুন কাউকে দায়িত্ব দেয়াটা ভালো।”

উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন কাউকে অধিনায়ক করার সুপারিশ আছে কিনা। উত্তরে মুমিনুল বলেন, “আমি কোনও পরামর্শ দেইনি। বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।”

“বোর্ড চিন্তাভাবনা করবেন, দুই তারিখ (২রা জুন) বোর্ড সভা আছে সেখানে জানাবেন।”

গতকাল মুমিনুল হক বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সাথে একটি সেশন করেছেন।

মুমিনুল হকের ব্যাটিং ও অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল
মুমিনুল হকের ব্যাটিং ও অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল

মি. ফাহিম এর আগেও বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের কঠিন সময়ে পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যাটিং টেকনিক নিয়ে কাজ করেছেন।

এমন একটা সিদ্ধান্ত যে আসবে সেটার আভাস গতকালই দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস।

তিনি বলেন, “একটা হীনমন্যতা দেখা গেছে মুমিনুলের ব্যাটিংয়ে। আমরা ওর সাথে বসবো।”

অধিনায়ক হওয়ার আগে ও পরে মুমিনুলের ব্যাটিং

অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থতার পাশাপাশি টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে যে একটা সুনাম ছিল, সেটাও যে ধীরে ধীরে কমে গেছে এই বিষয়টা মুমিনুল হককে একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিচ্ছিল সাম্প্রতিক সময়ে।

অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগে মুমিনুল হকের রান ছিল ৩৬ ম্যাচে ২৬১৩। টানা অর্ধশতকের রেকর্ডসহ ১৩টি ফিফটি এবং ৮টি শতক ছিল সেই সময়ে।

অধিনায়কত্ব পাওয়ার পরে ১৭ ম্যাচে গড় নেমে হয়েছে ৩২। অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর তিনি মাত্র দুইটি অর্ধশতক ও দুইটি শতক করেছেন ।

এটা সত্যি যে দলে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ এবং আগে অধিনায়কত্ব করা ক্রিকেটার থাকার পরেও তাদের অনীহার কারণেই মুমিনুল হককে টেস্ট দলের নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে এবং তিনি যে চাপে থাকেন সংবাদ সম্মেলনে কখনো কখনো ফুটে উঠছিল।

যেমন শেষ টেস্টে মুমিনুলের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, “সবাই সেঞ্চুরি করলে তো ১১০০ রান হয়ে যাবে।”

সূত্র : বিবিসি বাংলা

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্বে ফিরলেন সাকিব। - Ajker Valo Khobor
2 years ago

[…] ★★মুমিনুল হক অধিনায়কের পদ ছেড়ে দিলেন […]