পা দিয়ে লিখে জিপিএ পাঁচ পাওয়া শিক্ষার্থী তামান্না প্লাস্টিক সার্জারি করতে এখন হাসপাতালে।

পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পাওয়া অদম্য মেধাবী ছাত্রী তামান্না আক্তার নূরাকে (১৮) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার এ মেধাবী ছাত্রীকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ১৪০৩ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়। এসময় বিদেশি একটি প্রতিনিধিদল ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার নির্দেশনায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পাওয়া তামান্না আক্তার নুরাকে ঢাকায় আনা হয়েছে ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়ে তার চিকিৎসা ও পড়ালেখায় সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন।

ডা. সামন্ত লাল সেন আরও জানান, তামান্না আক্তার নুরার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কৃত্রিম হাত-পা লাগিয়ে তার চলাচলের ব্যবস্থা করার। কৃত্রিম পা ব্যবহার করা যায় কি না, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী শনিবার আবার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বসবেন।

এদিকে হাসপাতালে ভর্তির পর তামান্না উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, খুবই ভাল লাগছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি- তারা আমাকে নিয়ে এতটা ভেবেছেন। আমি হাঁটব, হাঁটলে আমাকে কেমন লাগবে- এটাই এখন আমার সারাক্ষণের কল্পনা।

অদম্য মেধাবী এ শিক্ষার্থী বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আমার সে স্বপ্ন হয়তো পূরণ হবে না। আমার ইনস্পিরেশন হলেন স্যার স্টিফেন হকিং। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও তিনি জগদ্বিখ্যাত হয়েছেন। আমারও ইচ্ছা গবেষণা করার, সরকারি বড় কর্মকর্তা হওয়ার।

তামান্না আক্তার নুরা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুর গ্রামের মো. রওশন আলী ও খাদিজা পারভীনের মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তামান্না বড়। জন্ম থেকেই দুই হাত ও এক পা নেই তার। শুধু বাম পা নিয়ে জন্ম নেওয়া তামান্না শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে এ বছর উপজেলার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করেন। ২০১৯ সালে উপজেলার বাঁকড়া জনাব আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এর আগে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পান শারীরিক প্রতিবন্ধী এ মেধাবী শিক্ষার্থী।

নিজের স্বপ্নপূরণে অদম্য তামান্না সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা ও তার দেখা করতে চেয়ে চিঠি লিখেন। সেই চিঠি তার বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হকের কাছে জমা দেন। পরে ওই চিঠি জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠান ইউএনও। চিঠিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী তামান্নাকে ফোন করেন

এরইমধ্যে যশোর শহরের আরএন রোডের ব্যবসায়ী রিপন অটোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজাজ উদ্দিন টিপু গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তামান্না নূরার আজীবন লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন।

সূত্র : জাগোনিউজ২৪.কম

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
৫৫ বছরের বেলায়েত শেখ এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন - Ajker Valo Khobor
2 years ago

[…] […]

সারাদেশে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর পুরস্কার পেলেন আটজন - Ajker Valo Khobor
2 years ago

[…] […]