দেশে করোনা শনাক্তের হার এক দিনের ব্যবধানে ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা) নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৪৩৪। এই সময়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ৪০ হাজার ১৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। তাঁদের মধ্যে ৬ জন ঢাকার, সিলেটের ২ জন এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহের ১ জন করে। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৭৫২ জন।
২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর পর থেকে এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৬ জন। সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে মারা গেছেন ২৮ হাজার ১৯২ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫৯৭ জন।
করোনার নতুন ধরন অমিক্রন দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার এই ধরন খুব দ্রুত ছড়ায়। কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বাড়ছে। দেশে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত এক সপ্তাহে (১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি) রোগী বেড়েছে ২২৮ শতাংশ।
এমন পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝি দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বেড়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেওয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে।
গত ডিসেম্বরের প্রথম দিকেও দেশে করোনা শনাক্ত ১ শতাংশের ঘরেই ছিল। তবে গত মাসের দ্বিতীয়ার্ধে এসে সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। গত মাসের শেষ দিকে যেখানে দৈনিক রোগী শনাক্ত ৫০০-এর ঘরে ছিল, সেখানে ধারাবাহিকভাবে বেড়ে এ সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১০ জানুয়ারি। এর চার দিনের মাথায় ১৪ জানুয়ারি দৈনিক রোগী শনাক্ত ৪ হাজার ছাড়ানোর তথ্য আসে। এরপর এক সপ্তাহ না যেতেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
করোনার বিস্তার রোধে সরকার ফের বিধিনিষেধ দিয়েছে। আজ থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল–কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা নেবে। সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি অংশগ্রহণ করা যাবে না এবং এসব ক্ষেত্রে যাঁরা যোগদান করবেন, তাঁদের অবশ্যই টিকা সনদ বা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর সার্টিফিকেট আনতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা সনদ গ্রহণ করতে হবে।
এ ছাড়া মসজিদ, বাজার, শপিং মল, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাগমস্থলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদারক করবে।
আল্লাহ হেফাজত করো আমাদের! এই দুর্যোগ উঠিয়ে নাও।
আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করুন।