সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রীর জিডি

সম্প্রতি পদত্যাগে বাধ্য হওয়া বাংলাদেশের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে ধানমন্ডি থানায় জিডি করেছেন তার স্ত্রী ডাঃ জাহানারা এহসান।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকরাম আলী মিয়া বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বিকেলে জরুরি নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন মিজ এহসান।

“পরে জিডি করেছেন যেখানে ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের অভিযোগ এনেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে,” বলছিলেন তিনি।

পুলিশ বলছে ৯৯৯ এ কল পাওয়ার পর পুলিশ সদস্যরা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় যান – তবে তিনি ওই সময় বাসায় ছিলেন না।

সম্প্রতি ঢাকার এক অভিনেত্রীর সাথে টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পর মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন মি. হাসান। তার আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়েকে নিয়ে এক মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি।

এসব ঘটনার পর জের ধরে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে কানাডায় গেলেও সেদেশে ঢুকতে না পেরে তিনি দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। তবে এরপর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের যেসব কমিটিতে তিনি ছিলেন – সেগুলো থেকেও ইতোমধ্যে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

এরপর আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তার স্ত্রীর ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ করার পর তিনি আবার আলোচনায় আসেন।

পদত্যাগের পর বিদেশে গেলেও দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন মুরাদ হাসান।
ছবির ক্যাপশান,পদত্যাগের পর বিদেশে গেলেও দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন মুরাদ হাসান।

জিডিতে যা বলেছেন মুরাদের স্ত্রী

জাহানারা এহসান জিডিতে বলেছেন যে তাদের ১৯ বছরের বিবাহিত জীবনে তাদের ১৬ ও ১১ বছর বয়সের দুটি সন্তান আছে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কারণে-অকারণে তাকে ও তার সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন তার স্বামী। আজ বেলা ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে মি. হাসান তাকে ও সন্তানদের গালিগালাজ ও মারধরে উদ্যত হলে তিনি ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান।

ধানমন্ডি থানা থেকে পুলিশ বাসায় পৌঁছালে মি. হাসান বাসা থেকে বের হয়ে যান বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

জাহানারা এহসান জিডিতে বলেন, “আমি এমতাবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিবাদী আমাকে ও আমার সন্তানদের যে কোন সময়ে ক্ষতিসাধন করতে পারে”।

তবে মিস্টার হাসানের ফোন বন্ধ থাকায় এসব বিষয়ে তার কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।

চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন ও নায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে কথোপকথন ফাঁস হয়েছিলো।
ছবির ক্যাপশান,চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন ও নায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে কথোপকথন ফাঁস হয়েছিলো।

টেলিফোন কথোপকথনের জেরে পদত্যাগ

যে টেলিফোন কথোপকথনের জেরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো – তার এক প্রান্তে ছিলেন বাংলাদেশের চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

অপ রপ্রান্তে ছিলেন পদত্যাগকারী তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুরাদ হাসান।

বিবিসিকে আগেই মি. ইমন নিশ্চিত করেছেন যে ওই কথোপকথন তার টেলিফোনেই হয়েছে, এবং মুরাদ হাসানই তাকে ফোন করেছিলেন।

ফাঁস হওয়া ওই অডিওতে মি. হাসানকে প্রকাশের অযোগ্য ভাষায় কথা বলতে শোনা গেছে। এমনকি এক পর্যায়ে তিনি মিজ মাহিকে ধর্ষণের হুমকিও দেন বলে অডিওতে শোনা যায়।

মি. ইমন বিবিসিকে বলেছেন, টেলিফোন আলাপের এই ঘটনাটি ঘটেছে ২০২০ সালের মার্চ মাসে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments