মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাব করতে ভিত্তি বছর পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর ফলে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে আসলেও জিডিপির আকার বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বার্ষিক মাথাপিছু আয়ও।
এর আগে ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরকে ভিত্তি ধরে হিসাব করলেও সম্প্রতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরকে নতুন ভিত্তি বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই হিসাবের ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। বিবিএস এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, নতুন ভিত্তি বছর অনুযায়ী, বর্তমান বাজারমূল্য বিবেচনায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। এটি আগের ভিত্তি বছরের হিসাবে ছিল ৩০ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন হিসাবে জিডিপির আকার বেড়েছে ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। ফলে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার থেকে বেড়ে ২ হাজার ৫৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩২৭ ডলার (২৯ হাজার ৪৩০ টাকা)। তবে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমেছে। যেমন পূর্বের হিসাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ভিত্তিবছর পরিবর্তন করায় এই হার কমে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ হয়েছে।
বিবিএস এর কর্মকর্তারা জানান, ভিত্তিবছর দশ বছর এগিয়ে আনায় হিসাবের আকারও বেড়েছে। অর্থনীতির অনেক খাতের অবদান জানতে আলাদা আলাদা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। রাইড-শেয়ারিং সেবা, মোটরযান, উড়োজাহাজ সেবা, নতুন ব্যাংক, মোবাইল আর্থিক সেবা, এজেন্ট ব্যাংকিং এসব খাতের তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাছাড়া ধান চালসহ কৃষি পণ্যের মূল্য সংযোজনের তথ্য সংগ্রহ করতে আলাদা জরিপও করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভিত্তি বছরকে একটি মানদণ্ড হিসাব করে কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাত কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে সে হিসাব করা হয়। ভিত্তিবছরে অর্থনীতির আকার বড় হলে স্বাভাবিক ভাবে হিসাবের বছরে প্রবৃদ্ধি কমে আসবে। তবে অর্থনীতির আকার বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো, নতুন নতুন বিভিন্ন খাত এই হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফলে অর্থনীতির আকার বেড়েছে এবং মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। যেমন বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী কৃষি খাতের মোট মূল্য সংযোজন বর্তমান মূল্যে বিগত অর্থবছরে ৪৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা হয়েছে, যেটি আগের হিসাবে ছিল ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। একই ভাবে শিল্প ও সেবা খাতের বিভিন্ন উপখাতের তথ্য যুক্ত হওয়ায় অর্থনীতির আকারও বড় হয়েছে।