লঞ্চের দেরিতে বিসিএস দেওয়া হলো না শতাধিক পরীক্ষার্থীর

ভোলা থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ঢাকায় পৌঁছাতে দেরি করায় শতাধিক পরীক্ষার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরীক্ষার্থীরা এ জন্য লঞ্চের কর্মচারী ও মাস্টারদের বিরুদ্ধে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ করেছেন। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে, চরে আটকা অন্য একটি লঞ্চের যাত্রীদের নিয়ে আসতে গিয়ে এই দেরি হয়।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।

ভোলার ভুক্তভোগী একাধিক পরীক্ষার্থী জানান, শুক্রবার ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ভোলার মনপুরা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে তাসরিফ-২ লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চটি মনপুরা থেকে ছেড়ে ভোলার তজুমদ্দিন, হাকিমউদ্দিন, দৌলতখান ও সদরের ইলিশা বিশ্ব রোড ঘাটে ভিড়ে যাত্রী উঠিয়ে সন্ধ্যার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। তাসরিফ-২ লঞ্চে হাতিয়া, মনপুরা, তজুমদ্দিন, হাকিমউদ্দিন, দৌলতখান ও ভোলা সদরের দেড় শতাধিক বিসিএস পরীক্ষার্থী ছিল।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর জেলার কাছাকাছি পৌঁছে লঞ্চটি আবার ঘুরিয়ে হাকিম উদ্দিন লঞ্চঘাটে চলে আসে। হাকিমউদ্দিন ঘাটে পৌঁছে তখন প্রায় রাত ১২টার বেশি। বিষয়টি টের পেয়ে লঞ্চ স্টাফ ও সুপারভাইজারদের জিজ্ঞাসা করেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের বলেন—তাঁদের আরেকটি লঞ্চের (তাসরিফ-৪) সমস্যা হওয়ার কারণে ওই লঞ্চের যাত্রীদের নিতে এসেছে।

পরীক্ষার্থীরা বলেন, এ সময় যাত্রীদের অনেক পরীক্ষার্থী প্রতিবাদ করলেও লঞ্চস্টাফ ও সুপারভাইজার তাঁদের পাত্তা দেননি। তাঁরা শুক্রবার সকাল ৭টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে। পরে সবাই লঞ্চমালিকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা না করে দ্রুত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নেমে পড়েন।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী আবদুস সামাদ বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষার্থীদের একেকজনের হল একেক স্থানে হওয়ার কারণে শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে আমরা দুপুরের দিকে তাসরিফ-২ লঞ্চে উঠে লঞ্চের স্টাফ ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা আমাদের বিনা খরচে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।’

এ ব্যাপারে লঞ্চ কোম্পানির ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ও তাসরিফ-২ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. জামালউদ্দিন বলেন, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমউদ্দিন ঘাটের কাছের মেঘনা নদীর চরে চরফ্যাশন থেকে ছেড়ে আসা তাসরিফ-৪ লঞ্চ আটকে যায়। ওই লঞ্চে অনেক বিসিএস পরীক্ষার্থী ও কয়েকজন গুরুতর রোগী ছিলেন। ওই যাত্রী তোলার জন্য বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ ঘাট থেকে লঞ্চ ঘুরিয়ে হাকিমউদ্দিন ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়।

এই দুই কর্মকর্তা আরও জানান, দুপুরের দিকে অনেক বিসিএস পরীক্ষার্থী এসে বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। পরে তাঁদের বিনা টাকায় তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপরও পরীক্ষার্থীরা ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে লঞ্চমালিকের ক্ষতি করেছেন।

সূত্র : প্রথম আলো

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments