শোয়েব মালিককে দেখেই ‘দুলাভাই’ ‘দুলাভাই’ স্লোগান ভারতীয় সমর্থকদের

এই প্রথম ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে পাকিস্তানের কাছে হারল ভারত। তা-ও যেনতেন হার নয়, ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হার। কাল দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটে-বলের লড়াই ছাপিয়েও ছোট ছোট দৃশ্যপট নাড়া দিয়েছে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের। ম্যাচ শেষে দলের হারের কষ্ট ভুলে মোহাম্মদ রিজওয়ান আর বাবর আজমদের সঙ্গে যেভাবে আড্ডায় মেতে উঠলেন কোহলি, সেটি তো কালকের সবচেয়ে সেরা দৃশ্য। ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশ রাজনৈতিকভাবে যতই উল্টো মেরুর হোক না কেন, দুই দলের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক যে বন্ধুত্বের, বিশ্বের সামনে কোহলি-বাবরদের সৌজন্য সেটিই প্রমাণ করেছে।

সবার দৃষ্টির আড়ালেই ঘটে গেছে আরও একটা চমৎকার ঘটনা, যে ঘটনা আরও বেশি আবেগময়, আরও বেশি মানবিক। পাকিস্তানি তারকা শোয়েব মালিক আর ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার সীমান্ত ছাপানো দাম্পত্য সম্পর্কই এ দৃশ্যের কেন্দ্রে।

শোয়েব মালিক ও সানিয়া মির্জার সঙ্গে তাঁদের ছেলে ইজহান

শোয়েব মালিক ও সানিয়া মির্জার সঙ্গে তাঁদের ছেলে ইজহানইনস্টাগ্রা

ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে শোয়েব মালিকের পরিচয়টা ক্রিকেটারের চেয়েও বেশি কিছু। তিনি ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের ‘দুলাভাই’। কাল দুবাইয়ে মালিক গ্যালারিতে থাকা ভারতীয় দর্শকদের কাছ থেকেই শুনলেন ‘দুলাভাই’ ডাক। ব্যাপারটা তাঁকে কতটা আলোড়িত করেছে, জানা নেই। তবে তা ছুঁয়ে গেছে সানিয়াকে। টুইটারে সে মুহূর্তের একটা ভিডিও শেয়ার করে ভালোবাসার চিহ্ন এঁকেছেন তিনি, পাশাপাশি দিয়েছেন হাসির ইমোজিও।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শোয়েব মালিকের খেলারই কথা ছিল না। প্রথমে তিনি চূড়ান্ত দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তবে তিনি পাকিস্তান দলে ঢোকেন শোয়াইব মাকসুদের চোটের কারণে। কাল ভারতের বিপক্ষে একাদশে থাকলেও ব্যাটিং করার সুযোগ হয়নি মালিকের। বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান তো কাউকে নামতেই দেননি। তার আগেই শেষ হয়ে গেছে খেলা।

কিন্তু ফিল্ডিংয়ের সময় বাউন্ডারি লাইনে গিয়েই একপর্যায়ে শোয়েব মালিক মুখোমুখি হন মধুর অভিজ্ঞতার। গ্যালারি থেকে তাঁর উদ্দেশে চিৎকার করে ভারতীয় দর্শকেরা ডেকে ওঠেন ‘জিজাজি’, অর্থাৎ ‘দুলাভাই’। কেবল ডেকে ওঠাই নয়, রীতিমতো ‘জিজাজি’ ‘জিজাজি’ বলে স্লোগানই তুলেছিলেন তাঁরা। একপর্যায়ে শোয়েব মালিকও গ্যালারির দিকে ঘুরে তাকিয়ে স্মিতহাস্যে ‘শ্যালক-শ্যালিকাদের আবদার’ মেটান।

ভিডিওটি দেখে তা পোস্ট করে সোনিয়া হাসি আর ভালোবাসার ইমোজি দিয়েছেন টুইটারে। এর বেশি কিছু বলেননি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে যথেষ্ট। বেশির ভাগ মানুষই পুরো বিষয়টিকে ভারত-পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। তবে সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়ানো মানুষেরও তো অভাব নেই। তাঁরা যথারীতি ‘একজন পাকিস্তানি’কে ‘দুলাভাই’ ডাকায় ধুয়ে দিচ্ছেন দুবাইয়ের গ্যালারির ওই নির্দিষ্ট অংশের দর্শকদের!

সূত্র : প্রথম আলো

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments