আসালাঙ্কা–রাজপক্ষেতে শেষ বাংলাদেশের আশা

শুরুতেই আঘাত হানলেন নাসুম আহমেদ। কুশল পেরেরাকে দ্রুত ফেরানোয় মনে হচ্ছিল শ্রীলঙ্কার জন্য ১৭২ রানের লক্ষ্যমাত্রটা কঠিনই হয়ে গেল। কিন্তু তিন নম্বরে নেমে চারিথ আসালাঙ্কা আশা দেখালেন শ্রীলঙ্কাকে। বাঁ হাতি এ ব্যাটসম্যান একপ্রাপ্তে দাঁড়িয়ে থেকে রীতিমতো খুনই করলেন বাংলাদেশের বোলিংকে। মাঝখানে সাকিব আল হাসানের জোড়া আঘাতে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ খেলায় ফিরল, কিন্তু আসালাঙ্কাই ভানুকা রাজাপক্ষের সঙ্গে জুটি গড়ে ম্যাচটা বাংলাদেশের কাছ থেকে বের করে নিয়ে গেলেন দুর্দান্তভাবেই। ১৭১ রান করেও সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।

বোলিংটা ভালো হয়নি। নাসুম আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ, সাইফউদ্দিন—তিনজনই ছিলেন ভীষণ খরুচে। মেহেদী কিছুটা সমীহ জাগালেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। সাকিব আশা জাগিয়েছিলেন, দুই উইকেটও নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গীরা তাঁর ছিঁটেফোটাও দেখাতে পারেননি। মোস্তাফিজও আশা অনুযায়ী বোলিং করতে পারেননি। লিটন দাসের দুটি সহজ ক্যাচ মিস—সব মিলিয়ে ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ডে ১৭১ রান তোলার পর বাকি দিনটা বাংলাদেশের ছিল না মোটেও।

আসালাঙ্কা আর রাজাপক্ষে হেসেখেলেই বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচ বের করে নিয়েছেন। এর আগে পাওয়ার প্লে’তে ৫৪ রান তুলে রান তাড়ায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর শ্রীলঙ্কা আসালাঙ্কা আর রাজাপক্ষের কাঁধেই সওয়ার। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল এলোমেলো বোলিং। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসালাঙ্কা আর রাজাপক্ষে ৫২ বলে ৮৬ রানের জুটি গড়েন। আসালাঙ্কার ইনিংসটি ছিল ৪৯ বলে ৮০ রানের। রাজাপক্ষের উইকেটটি শে দিকে নাসুম নিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। আউট হওয়ার আগে ৩১ বল খেলে ৫৩ করেছেন তিনি। ১৬ তম ওভারে সাইফউদ্দিনের বলে ২২ রান তুলেই ম্যাচে যাবতীয় উত্তেজনাটা আসলে শেষ করে দিয়েছিল লঙ্কানরা।

৮৬ রানের এক জুটিই শেষ করে দিয়েছে বাংলাদেশের আশা

৮৬ রানের এক জুটিই শেষ করে দিয়েছে বাংলাদেশের আশাছবি: এএফপি

দারুণ একটা ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের বোলাররা নিজেদের বোলিং-পরিসংখ্যান দেখলে কিছুটা লজ্জাই পাবেন। নাসুম আহমেদ ২.৫ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ২৯ রান, যদিও তিনি ২টি উইকেট নিয়েছেন। সাইফউদ্দিন ৩ ওভারে এক উইকেট নিয়েছেন ৩৮ রান দিয়ে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আজ বোলিংয়ে এসে ২ ওভারে দিয়েছেন ২১। আফিফ এক ওভারে ১৫। সাকিব যা একটু লড়াইয়ে রেখেছিলেন বাংলাদেশকে। সাকিব ৩ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। মেহেদী ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।

এই পরিসংখ্যানই আসলে বলে দেয় সবকিছু। তবে এ ম্যাচ লিটনকে ভালোই পোড়াবে। ব্যাট হাতে প্রত্যাশা পূরণে আবারও ব্যর্থ লিটন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আসালঙ্কা, রাজাপক্ষে—দুজনের দুটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন। কে জানে, ওই দুটি ক্যাচ নিতে পারলে হয়তো গল্পটা অন্যরকমই হতে পারত।

সূত্র : প্রথম আলো

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments