মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনে সফলতা পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল চিকিৎসক। এটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বেশ বড় অর্জন বলে দাবি করেছেন তাঁরা। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, এর ফলে চূড়ান্তভাবে অঙ্গ দাতার ঘাটতি দূর হতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যে নারীর শরীরে শূকরের কিডনি লাগানো হয়েছে তিনি আগে থেকেই ‘ব্রেইন ডেড’। লাইফ সাপোর্টে থাকা ওই রোগীর কিডনিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তাঁর পরিবারের অনুমতি নিয়েই অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাংগোন হেলথ মেডিকেল সেন্টারে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা। এর আগে শূকরের একটি জিন পাল্টে দিয়েছিলেন তাঁরা। যাতে প্রতিস্থাপন করা হলে মানবদেহ সেটাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান না করে।
গবেষকেরা রোগীর পেটের বাইরে পায়ের ওপরের অংশের কাছে কিডনিটি রক্তনালির সঙ্গে যুক্ত করে দেন এবং তিন দিন ধরে নানা রকরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেন।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন রবার্ট মন্টগোমারি বলেন, প্রতিস্থাপনের পরপরই স্বাভাবিকভাবে কাজ শুরু করেছে নতুন বসানো কিডনি। মানুষের কিডনি বসিয়ে ‘যে পরিমাণ মূত্র নিষ্কাশনের আশা করা যায়’ এ ক্ষেত্রেও ঠিক ততটাই পাওয়া গেছে। তিনি জানান, এর আগে মানুষ ছাড়া অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রেও জিন রূপান্তর না করা কিডনি বসিয়ে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তীব্রভাবে সেটা প্রতিহত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি।
চিকিৎসকেরা শূকরের জিন বিন্যাস থেকে শর্করা তৈরি করে এমন একটি জিন বাদ দিয়ে দিন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ-এর অনুমতি নিয়ে সেই পরিবর্তিত জিনের একটি শূকরের জন্ম দিয়ে সেটি বড় করে তোলা হয়। এটির শরীর থেকেই পরে কিডনি প্রতিস্থাপন করেন তাঁরা।
যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের নতুন এই গবেষণার কাজটি এখনও ‘পিয়ার-রিভিউ’ বা কোনো মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। যদিও তাঁদের এর জন্য পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এখন পর্যন্ত চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য সবচেয়ে আধুনিক পরীক্ষা।