করোনাভাইরাস : কীভাবে ঘরে তৈরি করবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক

অনেক দেশেই লকডাউন তুলে নেয়ার শর্ত হিসেবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ফেসমাস্ক পরা।

চিকিৎসকের জন্য নির্দিষ্ট ফেসমাস্ক বা শ্বাস নিতে পারা যায় এমন শক্তভাবে আঁটা মুখের ঢাকা স্বাস্থ্যকর্মী এবং বৃদ্ধ নিবাসে যারা বয়স্ক ও অসুস্থদের দেখাশোনা করে তাদের জন্য রাখার কথা বলা হচ্ছে।

অনেক দেশেই ফেসমাস্ক না পরলে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের অনেক অফিস, আদালত, বিপনীবিতানে ফেসমাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেয়া হয় না।

আপনি নিজেই ঘরে বসে আপনার নিজের জন্য এই মাস্ক বানানোর চেষ্টা করতে পারেন।

ফেস মাস্ক পরলে চশমা ঘোলা হচ্ছে? কাটাবেন কীভাবে?

নিজের মাস্ক বানান

বিভিন্নধরনের মাস্ক কীভাবে বানানো যায় ধাপে ধাপে তা দেখানো হয়েছে এখানে।

যদি সেলাই মেশিন আপনি চালাতে পারেন তাহলে টি- শার্ট কেটে বানাতে পারেন মাস্ক, কিংবা চটজলদি বানাতে চাইলে সে পদ্ধতিও রয়েছে। মূল বিষয়টা সবক্ষেত্রেই এক। কাপড় যদি কয়েক পরতে দেয়া যায়, তাহলে আরও ভাল। মাস্ক আপনার নাকমুখ শক্ত করে যাতে ঢেকে রাখে সেটা দেখতে হবে, সেইসাথে দেখতে হবে আপনি স্বচ্ছন্দে নি:শ্বাস নিতে পারছেন কি না।

একটা গবেষণায় দেখা গেছে যে এর জন্য সবচেয়ে ভাল কাপড় হল আঁটো বুনুনির সূতির কাপড়, প্রাকৃতিক রেশম বা সিল্কের কাপড় অথবা কুইলটেড সূতির কাপড়। যদি এধরনের কাপড় না থাকে, ঘরে যা আছে তা দিয়েও আপনি এই মাস্ক বানাতে পারবেন।

সহজটা দিয়েই শুরু করা যাক।

রুমাল ভাঁজ করে ফেসমাস্ক বানানোর পদ্ধতি

ফেস মাস্ক পরার আগে এবং খোলার পরে ভাল করে হাত ধুতে ভুলবেন না।

এছাড়াও অন্য পরামর্শগুলোর কথা মনে রাখবেন:

  • কোনসময় চোখ, নাক, বা মুখে হাত দেবেন না।
  • ব্যবহার করা মুখের ঢাকা বা মাস্ক একটা প্লাস্টিক ব্যাগে আলাদা করে রেখে দেবেন, যতক্ষণ না সেগুলো ধোয়ার সুযোগ পান।
  • নিয়মিত ফেস মাস্ক কাচুন- আপনার অন্যান্য কাপড়চোপড়ের সাথে স্বচ্ছন্দে এগুলো কাচতে পারেন, সাধারণ কাপড় কাচা সাবান ব্যবহার করে।

এর পরের মাস্কটি তৈরি করা হচ্ছে পুরনো টি শার্ট ব্যবহার করে। সূতির কাপড় বা সূতি ও পলিয়েস্টার মেশানো কাপড় দিয়ে এটা বানাতে পারেন। এখানেও কোন সেলাইয়ের প্রয়োজন নেই।

পুরনো টি শার্ট কেটে কীভাবে মাস্ক বানাবেন

কিছু কিছু বিজ্ঞানী এবং ব্রিটিশ সরকারের মত হল ঘরে তৈরি মাস্ক আপনাকে যে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচাবে তা নয়, তবে আপনি মাস্ক পরলে, আপনার যদি সংক্রমণ হয়ে থাকে, আপনার কাছ থেকে আরেকজন সংক্রমিত হবে না। অনেক সময় মানুষের শরীরে জীবাণু থাকলেও অনেকের কোন উপসর্গ দেখা যায় না।

আপনার যদি করোনাভাইরাস উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন অনেক জ্বর, একটানা কাশি, তাহলে ঘরের বাইরে যাবেন না। নিজেকে আইসোলেট বা বিচ্ছিন্ন রাখুন।

যেধরনের ফেস মাস্কই আপনি ব্যবহার করুন না কেন, লকডাউনের অন্যান্য বিবিধনিষেধ পাশাপাশি মেনে চলতে হবে।

ঘনঘন হাত ধোয়ার কোন বিকল্প নেই। হাত সবসময় পরিস্কার রাখুন। বাসায় ঢোকার পর সাবান দিয়ে অন্তত বিশ সেকেন্ড ধরে ভাল করে হাত ধোবেন।

আমাদের তৃতীয় মাস্ক বানানোর পদ্ধতিতে একটু সেলাই জানার প্রয়োজন আছে। অনেকের কাছে এই সেলাই সহজ মনে হতে পারে, অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন এটা একটু জটিল। বড় কথা হলো সেলাইটা এমনভাবে করতে হবে যাতে মাস্ক খুলে না পড়ে এবং কয়েকবার কাচার পরও তা টেকসই হয়।

দুই টুকরা কাপড় জোড়া দিয়ে এই মাস্ক বানাতে হয়

এছাড়াও মাস্ক বানানোর আরও অনেক উপায় আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেশাদার মাস্ক বানানোর অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়।

নিজের হাতে বানাতে বসে যান আপনার নিজের মাস্ক। হয়ত মজাই লাগবে বানাতে। তবে মনে রাখবেন একটার বেশি বানাতে হবে। কারণ একটা মাস্ক ব্যবহারের পর কাচতে দিলে হাতের কাছে আরেকটা তো লাগবে।

একটা সতর্কতা- দুবছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ফেস মাস্ক পরাবেন না। যারা কোনরকম অসুস্থতা বা অসুবিধার কারণে ঠিকমত মাস্ক পরতে পারছেন না, তাদেরও মাস্ক না পরাই ভাল।

বিবিসির ভিসুয়াল জার্নালিজম টিমের সাংবাদিকরা এই প্রত্যেকটা মাস্ক বানিয়েছেন।

গ্রাফিক্স : আইরিন ডে লা টোরে-আরিনাস

সূত্র : বিবিসি বাংলা

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments