বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে, গেস্টরুম-বিভীষিকা বন্ধ হোক

দেশের কর্তাব্যক্তিরা এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কিংবা ডিজিটাল বিপ্লবের কথা বলছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিপীড়নমূলক চর্চা জারি রাখা হয়েছে। এ চর্চায় এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আরেক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক সমমর্যাদার নয়, বরং আধিপত্যমূলক। বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ গ্রাম ও মফস্বল থেকে আসেন। টিউশনি বা ছোটখাটো কাজ করে তাঁদের অনেকের চলতে হয়। ফলে হলে আসন না পেলে অনেকের পক্ষেই উচ্চশিক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসনের তুলনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। এ সংকটকেই কাজে লাগায় ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনগুলো। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তারা গণরুম খুলে বসে। ছাত্রদের থাকার জন্য হলের বারান্দায় কিংবা অন্য কোথাও দেড় ফুট বাই পাঁচ ফুট জায়গা বরাদ্দ দেয়। ওইটুকু মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের বিনিময়ে শিক্ষার্থীর ইচ্ছা, অনিচ্ছা, মতপ্রকাশ, স্বাধীনতা—সবকিছুই যেন কিনে নেওয়া হয়। এমনকি তাঁদের খাওয়া, ঘুমানো, পড়াশোনা, ক্লাস, পরীক্ষা—কোনো কিছুই আর যেন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আর এ ক্ষেত্রে হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা ঠুঁটো জগন্নাথের মতো।

আমরা এখন উন্নত এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। অথচ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, যারা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার ভার নেবে, তাদের ওপর দাসত্বের এক সংস্কৃতি চাপিয়ে দিচ্ছি। বিশ্বের কোনো সভ্য সমাজ তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর এ রকম প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা চালু করেছে?

Source link

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments