২৫শে মার্চ রাতে যে-নির্মম গণহত্যা শুরু হয়েছিল, এক অর্থে তার অবসান হয় মধ্য-ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যার মধ্য দিয়ে। মধ্যবর্তী সময়ে মানুষ স্বেদ দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে, সম্ভ্রম দিয়েছে। আবালবৃদ্ধবনিতার আত্মত্যাগে দেশের মুক্তি ত্বরান্বিত হয়েছে। পাশবিকতা যে কী, তা জেনেছে তখন যাঁদের মনে রাখার বয়স হয়েছিল, তাঁদের সকলে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল প্রকৃতই জনযুদ্ধ। এ-যুদ্ধ নিয়ে সেদিনের সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই বলবার মতো কথা আছে। নয় মাসে অনেক বীরত্বগাথা রচিত হয়েছে। বলা হয়, ফরাসি বিপ্লবের সময়ে প্রত্যেক ফরাসি পরিণত হয়েছিল অতিমানবে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ঠিক তা-ই ঘটেছিল। বাঙালি—শুধু এই পরিচয়ের ভিত্তিতে বাড়িতে জায়গা দিয়েছে মানুষ, অন্ন ভাগ করে নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা—শুধু এইটুকু জেনেই তাকে সর্বপ্রকার সহায়তা দিয়েছে। রণাঙ্গনে তো বটেই, রণাঙ্গনে না গিয়েও মানুষ বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে। ২৬শে মার্চ তাই আমাদের স্বাধীনতা দিবস, নতুন ঊষার অভ্যুদয়।