আমি ডাক্তার নুরিয়া। কাবুল শহরের একটি হাসপাতালের স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ। তালেবান যখন কাবুল শহর দখল করল, আমরা সবাই মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ অনেক হইচই শোনা গেল, মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরছিল, সবার মনে ভয়ের ছায়া আর আতঙ্ক। তালেবানরা হাসপাতালেও ঢুকল। নারীদের জীবনে নেমে এলো ঘন অন্ধকার। কাবুল যেন এক মৃত নগরীতে পরিণত হলো, কেউ আর ঘর থেকে বের হয় না, সবার কণ্ঠ যেন স্তব্ধ হয়ে গেল।
আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন নারী চিকিৎসক হিসেবে বিভিন্ন নারী-অধিকার আদায় ও সংরক্ষণ বিষয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্দোলনও করেছি। নারীদের জন্য হাসপাতালে কাজ করি ঠিকই, কিন্তু প্রতিটি মুহূর্তে আমাকে ভয়ে থাকতে হয়, কখন তারা আমার কোন ক্ষতি করে। কারণ, নারীদের সঙ্গে তারা খুব অসম্মানজনক আচরণ করে, নারীদের তারা মানুষই মনে করে না। তারা চায়, নারীরা যেন ঘরের বাইরে না বেরোয়।
আমি নারীদের প্রতিবাদ আন্দোলনগুলোতে অংশ নিয়ে থাকি। আমি অনুরোধ জানাই সেসব সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও নারীকে—আমাদের এই অবস্থায় একা ছেড়ে দেবেন না। আফগান নারীদের এত দিনের অর্জন যেন ব্যর্থ না হয়, এই অতল অন্ধকারের মধ্যে থেকে আমরা যেন বেরিয়ে আসতে পারি, আমাদের পাশে দাঁড়ান। যেভাবে নারীদের মৌলিক অধিকার হরণ করে তাঁদের ঘরের মধ্যে বন্দী করা হয়েছিল, সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। সব দেশের মানুষের কাছে আবেদন জানাই, আমাদের সহযোগিতা করুন, আমাদের কণ্ঠ যেন রুদ্ধ না হয়ে যায়।