রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ভায়ালক্ষ্মীয়পুর ইউনিয়নের টিকাকেন্দ্রে সকাল থেকেই ভিড় ছিল। ভিড় ঠেলে বাইরে এসে রায়পুর গ্রামের গৃহিণী আকলিমা বেগম (৫০) বলছিলেন, ‘সকাল আটটায় আইচি। আমার ডায়াবেটিস, প্রেসার। পায়ে ব্যথা। পায়ের মোদ্দে কটকট কোরতিচে। দাঁড়াতে পারতিছি না। তাই লাইন থাইকি বারা আইছি।’
এর উল্টোচিত্র দেখা গেছে রাজশাহী মহানগরের মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কেন্দ্রে। সেখানে আগের বুথের পাশাপাশি বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির জন্য তিনটি নতুন বুথ করা হয়েছে। নতুন বুথগুলোর দুটিতে মাঝেমধ্যে দু-একজন করে এসে টিকা নিয়ে গেছেন। আরেকটি বুথে কোনো মানুষই ছিলেন না। সেখানে একজন স্বেচ্ছাসেবককে টেবিলে মাথা দিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
ঢাকা ও সিলেটের মতো রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকা নিতে আসা মানুষের চাপ কম ছিল।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, শহরের ৮০ ভাগ মানুষ আগেই টিকা নিয়েছেন। সেই জন্য টিকা নেওয়ার চাপ কম। তারপরও বলতে হবে, এবার উপস্থিতি একটু কম।
তবে ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যাপক ভিড় ছিল। সকাল সাড়ে আটটায় পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গিয়ে দেখা গেছে, টিকা নিতে আসা মানুষের সারি রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কে এসে ঠেকেছে। একই অবস্থা দেখা গেছে, চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছি ইউনিয়ন পরিষদ ও ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে। ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রের বাইরে টিকা নিতে আসা মানুষের ভ্যান ও রিকশার ভিড়ের কারণে রাস্তায় যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়েছে। পরিষদের সামনে থেকে মানুষের সারি পাশের ডাকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পর্যন্ত চলে গেছে। আবার এই ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডের টিকাকেন্দ্র করা হয়েছিল ডাকরা হাইস্কুল কেন্দ্রে। ওই স্কুলের মাঠেও ছিল উপচে পড়া ভিড়।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় সকাল থেকেই ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এর মধ্যেও নাজিরপুর, কালাইয়া ও সূর্য্যমণি ইউনিয়ন পরিষদের টিকাদানকেন্দ্রে অনেক মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। পটুয়াখালীর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, গতকাল ২২ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
তবে সব ইউনিয়নেই যে প্রচুর ভিড় ছিল, তেমন নয়। গোয়ালন্দ উপজেলার ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পৌরসভাসহ উপজেলার উজানচর, দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ও ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়। হাসপাতাল ছাড়া অন্য কেন্দ্রগুলোতে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান মণ্ডল বলেন, কিছুদিন আগে গণটিকাদান কর্মসূচিতে অনেক ভিড় ছিল। এবার তেমন হয়নি।